Tuesday, August 15, 2017

ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট।

We provide transport facility at convenience cost, pick and drop, office purpose, long tour, Monthly basis etc, service available for whole Bangladesh and Dhaka city.....to know more call us.http://rentacarsbd.com

ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। নদীর অপর পাড়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। পদ্মা ভাঙতে ভাঙতে দোহারের প্রান্তে এখন চরমোহাম্মদপুরে এসে ঠেকেছে। এখানেই ঘাট। ঢাকার গুলিস্তান থেকে সরাসরি পাকা সড়ক চলে এসেছে ঘাট পর্যন্ত। এই রুটে বাস সার্ভিসও চালু আছে বহুদিন থেকে। এখন জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা। ঢাকা থেকে বাসে আসতে সময় লাগে ঘণ্টা তিনেক। আসলে সময় নির্ভর করে পথের যানজটের ওপর।
মৈনট ঘাটের এই হঠাৎ খ্যাতি ঘাটের দক্ষিণ পাশের চরটির জন্য। ঘাটের মাঝি চরমোহাম্মদপুরের বাবুল মোল্লার কাছে জানা গেল, নদীর পাশের এই নিচু জমিটি ২০১৫ সালে বন্যায় তলিয়ে যায়। উত্তর পাশে বালু পড়লেও দক্ষিণের অংশে পুরু হয়ে পলি পড়ে। পানি নেমে যাওয়ার পরে পলি মাটি জমে থাকা জায়গাটি অনেকটা সমুদ্রসৈকতের মতো দেখায়। বালু না থাকায় চলাফেরাও বেশ সুবিধাজনক। নদী পারাপারের সময় অনেকে এখানে এসে ছবি তোলেন। ফেসবুকে সেই ছবি দিতে থাকেন। সেই ছবি দেখে লোকে এখানে বেড়াতে আসতে থাকে। লোকসমাগম গত বছর থেকে বেশি হচ্ছে। এ বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। এ ছাড়া শুক্র-শনিবার আর ছুটির দিনেও ১০ হাজারের মতো লোক এখানে বেড়াতে আসে।
মৈনট ঘাটের বয়স কত, তা কেউ সঠিক বলতে পারে না। তবে মিনি কক্সবাজার হিসেবে তার এই নয়া পরিচিতি বছর দুই হলো, মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে।
দ্রুত খ্যাতি লাভ করার প্রতিক্রিয়া ভালো-মন্দ উভয়ই প্রকারেরই। সমুদ্রসৈকত ভেবে গোসল করতে নেমে গত দেড় বছরে এখানে নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর ধরনে বাড়ির কাছেই সমুদ্রসৈকতের আবহ উপভোগ করতে প্রচুর লোকসমাগম হচ্ছে এখানে। গড়ে উঠেছে বেশ কিছু খাবার হোটেল। শুকনো মরিচ সহযোগে ডুবো তেলে ইলিশ ভাজার সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে পদ্মার বুক ছুঁয়ে ধেয়ে আসা ঘাটপাড়ের ভেজা হাওয়ায়।
মৈনট ঘাট থেকে পদ্মা পার হয়ে লোকে ফরিদপুর যাতায়াত করে। ঘাটে নদী পার হওয়ার বাহনও সদা প্রস্তুত। বাহন দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে ৭০-৮০ জন যাত্রী ওঠে। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। আর স্পিডবোটে ওঠে ১৫-২০ জন, ভাড়া ১৬০ টাকা। স্পিডবোটের যাত্রীদের জন্য কোনো লাইফ জ্যাকেট নেই। ঝুঁকি নিয়েই তারা নদী পারাপার হয়। ঘাটের কিনারে ইজারাদারের টোল আদায়ের ঘর। সেখানে দায়িত্ব পালনকারী ইজাদারের প্রতিনিধি মো. জিয়া দাবি করলেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না। তাই লাইফ জ্যাকেটের দরকার নেই। এ বছর তিন কোটি টাকায় তাঁরা ঘাটের ইজারা নিয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
লোকসমাগম বাড়তে থাকায় বেশ কিছু নতুন হোটেল হয়েছে। নদীতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছাউনি দেওয়া নৌকা এসেছে ডজনখানেক। নৌকায় বেশ ভালোই আয় হচ্ছে। তাই বাবুল মোল্লাও এমন একটি নৌকা নামিয়েছেন এ বছর। ঘণ্টাপ্রতি নৌকা ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা। শতকরা ৪০ টাকা টোল দিতে হয় বলে ভাড়া বেশি—জানালেন বাবুল। এ কারণে ঘাট পার হতে যাত্রীভাড়াও বেশি। স্পিডবোটে ১৬০ টাকা ভাড়ার টোল ১০০ টাকা, ট্রলারে ৮০ টাকা ভাড়ার টোল ৫০ টাকা।
ছাতার তলায় পাতা চেয়ারগুলো ভাড়া নেওয়া যায় প্রতিটি ১০০ টাকা ঘণ্টায়। এগুলো পেতেছেন মিজানুর রহমান ও তাঁর চার বন্ধু।  মিজানুর জানালেন, তিনি ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী। পাশের গ্রামেই তাঁর বাড়ি। একটু আয়-রোজগারের আশায় ২০টি চেয়ার পেতেছেন পাঁচ বন্ধু মিলে।
আয়-রোজগার যে মন্দ হচ্ছে না, তা দেখা গেল। ছাতার তলায় খোলা হাওয়ায় বসে উদার প্রকৃতির অকৃত্রিম শোভা উপভোগ করছিলেন রেহান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী নাদিয়া জামান। তাঁদের ছেলে আর ভাগনেরা সামনের পলিমাটির চরে ছোটাছুটিতে মগ্ন। রেহান দম্পতি জানালেন, ফেসবুক থেকেই তাঁরা মৈনট ঘাট সম্পর্কে জেনে এখানে বেড়াতে এসেছেন। থাকেন ঢাকার জিগাতলায়। গুলিস্তান থেকে বাসে এসেছেন। বেশ ভালোই লাগছে তাঁদের এখানে এসে।
এ রকম আরেকটি দলের দেখা পাওয়া গেল খানিকটা দূরে। দলটি বেশ বড়। পরিবার-পরিজনের ১০ সদস্যের দলের নেতৃত্বে আছেন একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনসুরুল হক। ঢাকার কলাবাগান থেকে নিজেদের গাড়িতে এসেছেন প্রায় দুই ঘণ্টায়। তাঁরা বিস্মিত। ‘ঢাকার এত কাছে এ রকম সুন্দর জায়গা আছে, না এলে বুঝতেই পারতাম না’—এই হলো মনসুরুলের প্রতিক্রিয়া। অন্যরা তখন ব্যস্ত নৌকা ভাড়া করতে।
প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা হবে চরটি। অনেকে হাঁটাহাঁটি করছেন, কেউবা হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেখছেন পদ্মা। সাহস করে নেমেও পড়ছেন কেউ কেউ। তবে প্রহরারত পুলিশ সদস্যরা তাঁদের সতর্ক করে দিচ্ছেন, ‘সাঁতার না জানলে পানিতে নামবেন না।’ পুলিশ সদস্যদের কাছে জানা গেল, গত প্রায় দেড় বছরে এখানে নদীতে নেমে নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।
অনেকের ধারণা, কক্সবাজারের মতো জায়গাটি ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটি নদী, সমুদ্র নয়। এখানে পাড় একেবারে খাড়া। সে কারণে নামলেই গভীরে পড়তে হয়। দক্ষ সাঁতারু না হলে সেখান থেকে ওঠা মুশকিল। এ কারণেই নদীতে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। এখন বহু লোক আসছে। নিরাপত্তার জন্য দোহার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি থেকে সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানালেন কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক সাজেদুল ইসলাম।
পদ্মার পাড়ে এসে ইলিশের স্বাদ না নিয়ে ফিরলে মনে যেন আক্ষেপ না হয়, সেই ব্যবস্থা করে রেখেছেন হোটেলওয়ালারা। আস্ত ইলিশ ভাজা থেকে শুরু করে ইলিশ ভর্তা পর্যন্ত ইলিশেরই হরেক রকম পদ পাওয়া যাবে হোটেলগুলোতে। ইলিশ ছাড়া নদীর অন্য মাছ, খাসি-মুরগির তেল-ঝালের তরকারির সঙ্গে বিনা মূল্যের ডাল। পদ্মা রোজ নিউ খাবার হোটেলের মালিক জুলহাস ভূঁইয়া জানালেন, তিনি ২০০০ সাল থেকে এখানে হোটেল ব্যবসা করছেন। তাঁর হোটেলটিসহ আগে এখানে মোটে তিনটি হোটেল ছিল। লোকজনের যাতায়াত কম ছিল। এখন লোকসমাগম বাড়ায় হোটেল হয়েছে ১০টি। এ ছাড়া আছে অনেকগুলো চায়ের দোকান। বিকেলে নদীর চরে ফুচকা চটপটিওয়ালারা যায়। সব মিলিয়ে বেশ জমজমাট পরিবেশ।
মৈনট ঘাটে বেড়াতে গিয়ে ইলিশের স্বাদ নিন, নৌকায় ভেসে যান কিংবা ছাতার তলায় অলস বসে খোলা হাওয়ার ঝাপটায় শরীর জুড়িয়ে নিন; কোনো সমস্যা নেই, নারী-পুরুষ যে-ই হোন, মনে রাখতে হবে সেই গানটি—‘আমার যেমন বেণি তেমনি রবে চুল ভেজাব না...’। কারণ, পদ্মা প্রমত্তা। তার স্রোত প্রখর, খাড়া পাড় অনেক গভীর। দুঃসাহসী হয়ে ওঠার প্রলোভনে নেমে পড়লে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ বিপদ।
এখানে সেভেন রেন্ট-এ-কার হতে নিতে পারেন ১১ সিটের হায়েস নিউ শেপের ডুয়েল এ/সি গাড়ী, ১০ / ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘুরে আসলে টোটাল খরচ হবে, ৬,০০০/ , ৭ সিটের নোয়া নিয়ে ঘুরে এলে খরচ হবে ৪,৫০০/, ৪ সিটের নরমাল প্রাইভেট গাড়ী নিয়ে ঘুরে এলে খরচ হবে, ৩,৫০০/ টাকা । আর সেভেন রেন্ট-এ-কার এর গাড়ী নিতে চাইলে, ঠিকানা ও বিস্তারিত দেখুন ,  www.rentacarsbd.com 
phone; 01611511616